স্টাফ রিপোর্টার: শেরপুর রিপোর্টারস ইউনিটি (এসআরইউ) এর মাধ্যমে শেরপুর সদর ইএনও’র খাদ্য সহায়তা পেলেন হতভাগ্য জমজ শিশু জেসমিন-ইয়াসমিন। ২৩ জুলাই শনিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বলাইচর ইউনিয়নের চর জঙ্গলদী গ্রামে জমজ শিশু’র দাদী ফিরোজা বেগমের হাতে উপজেলা প্রশাসনের এসব খাদ্য সহায়তা তুলে দেন শেরপুর রিপোর্টারস ইউনিটির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সিনিয়র সাংবাদিকরা।
এসব খাদ্য সহায়তার মধ্যে ছিলো সুগন্ধি চাল, ডাল, তেল, চিনি, সাগু, বিস্কুট ও খেজুর। খাদ্য সহায়তা তুলে দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক জিএম বাবুল, রফিক মজিদ এবং রিপোর্টারস ইউনিটি’র সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম,কার্যনির্বাহী সদস্য শফিউল আলম সম্রাট,সহ-সভাপতি এনামুল হক,যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল করিম,ক্রীড়া সম্পাদক বিল্লাল হোসেন সোহাগ,তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক রাজন মিয়া ।
জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে শেরপুর সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের হতভাগ্য জমজ বোন জেসমিন-ইয়াসমিনের বাবা এবং মা দু’জনই নিজেদের স্বার্থে পৃথক ভাবে সংসার গড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। এসময় মাত্র ৬ মাস বয়সের জেসমিন-ইয়াসমিনকে দেখাশোনা করতো তাদের দাদী ফিরোজা বেগম। ফিরোজা বেগমরও প্রায় ১৫ আগে স্বামী মারা যাওয়ার কারণে ঢাকায় ছেলের কাছে থাকতেন। কিন্তু তার ছেলে ও ছেলের বউ মাত্র ৬ মাস বয়সের দুধের শিশুদেরকে ফেলে চলে যাওয়া ফিরোজার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। জমজ শিশুদের বাঁচানোর স্বার্থে তিনি ফিরে আসেন গ্রামে। এখানে তিনি ভিক্ষে করে তার নাতনীদের খাওয়ার ব্যবস্থা করতে থাকেন। কিন্তু নাতনীদের জন্য গরুর দুধতো দুরের কথা নিজের পেটের ভাতই জোগার করা কষ্ট হয়ে পড়ে।
তারপরও এবাড়ি-ওবাড়ি চেয়ে-চিন্তে চলতে থাকে দাদী-নাতনীর জীবন সংগ্রাম। অসুখ-বিসুখ, বিদ্যুতবিহীন ভাঙ্গা ঘরে রোদ-বৃষ্টি আর প্রচন্ড গরমে কোন রকমে বেঁচে আছে তারা। এদিকে এ খবর পেয়ে শেরপুর রিপোর্টারস ইউনিটি’র নেতৃবৃন্দরা গত রমজানের ঈদের আগে কিছু নগদ টাকা ও খাদ্য সহায়তা দেন। এসময় বেশ কিছু গণমাধ্যমে তাদের নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে নেন জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার। তার উদ্যোগে শেরপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মেহনাজ ফেরদৌস শনিবার উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তা খবির খানের মাধ্যমে কিছু খাদ্য সহায়তা পাঠান ওই জেসমিন-ইয়াসমিনের জন্য। তিনি জানায়, পরবর্তিতে তাদের জন্য প্রতি মাসে কিছু অর্থ সহায়তা এবং তাদের ভাঙ্গা ঘরটি সংস্কারের উদ্যোগ নিবেন উপজেলা প্রশাসন থেকে।