স্টাফ রিপোর্টার: শেরপুর সদর উপজেলার হেরুয়া বালুরঘাট নিজ গ্রামে ফায়ার ফাইটার রমজানুল ইসলাম রনির দাফন সম্পন্ন। জানাজায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও রনির আত্মীয় জনগণসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। জানাজা নামাযের দায়িত্বে ছিলেন রমজানুল হক রনির চাচা মুফতি নজরুল ইসলাম আজাদী। এর আগে, আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টায় রনির মরদেহে এসে পৌঁছে তার নিজ এলাকায়। মরদেহ পৌঁছার পর থেকেই স্থানীয় জনগণের ভিড় বাড়তে থাকে ।
ওইসময় শেরপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তারা তাকে গার্ড অব অনার ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এরপর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। প্রায় দেড় বছর আগে চাকুরী হয় রনির। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় রনি, তিন মাস আগেই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বদলী হয়ে সেখানেই স্ত্রীসহ বসবাস করছিলেন।
এদিকে, আদরের নাতি রনির মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বিছানায় পড়ে গেছেন দাদি আফরোজা বেগম। নাতি মারা যাওয়ার কথা শুনে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে ৭৫ বছর বয়সী দাদা ইউনুস আলীর। চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে বলে উঠছেন, ’আমার দাদু ভাই কই গেল, আমার দাদু ভাই কই গেল, ভাইরে তুমি আমারে ফালায়া কই গেলা।’ এদিকে রনির স্ত্রী রুপা আক্তার বলেন, আমরা মরদেহ শনাক্ত করার পরও অজ্ঞাতনামা থেকে নাম কাটাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডোমদের টাকা দিতে হয়েছে। রুপা আক্ষেপ করে বলেন, দেশের জন্য প্রাণ দিলেও ভাইয়ের মরদেহ পেতে টাকা গুনতে হলো।
নিহতের চাচা জানান, প্রায় দেড় বছর আগে দমকল বিভাগে চাকরি হয় রনির। চার ভাইবোনের মধ্যে বড় ছিলো রনি। প্রায় তিনমাস আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বদলি হয়ে সেখানেই স্ত্রীসহ বসবাস করছিল। গ্রামের লোকজন জানায়, স্বজনদের কাছে রনি যেমন প্রিয় ছিলেন, ঠিক একইভাবে গ্রামে নম্র-ভদ্র ও পরোপকারী ছেলে হিসেবে রনি গ্রামে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। ছুটিতে বাড়িতে এলেই তিনি প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নিতেন, সাহায্য করতেন। তার ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম রকিব ময়মনসিংহ রেখে পড়াশোনা করাতেন রনি। এক বোন আশামনি নবম শ্রেণিতে ও আরেক ছোট বোন আঁখিমনি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এদের লেখাপড়ার খরচসহ পরিবারের আয়ের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন রনি।